গল্পটা আমাদের।সদ্য তারুণ্যে পা রাখার সাথে সাথে,বিশ্ববিদ্যালয় ভরতিযুদ্ধেও নেমে পড়তে হয়।বাবা মার ইচ্ছায় মেডিকেল কোচিংএ ভরতি হলেও,মেয়েটির নিজের ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং।তাই ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটিতে পড়া চাচাত ভাইয়ের কাছে,গ্রিহশিক্ষকের জন্য শরণাপন্ন হওয়া।সে বলল,"আমার খুবই ভদ্র এক বন্ধুকে ঠিক করে দিচ্ছি বোনকে।"পরিচয় করতে বাসায় নিয়ে আসবে।নতুন বাসা,তাই চেনানোর জন্য মেয়েটি বারান্দা থেকে ডাক দিল।পাঁচ তলার বারান্দা থেকে ডাকা বন্ধুর বোনটিকে দেখে,কেন জানি অতি ভদ্র ছেলেটির বুকে কাঁপন ধরল।প্রথম দর্শনে প্রেম বোধহয় একেই বলে।চঞ্চল মেয়েটি যখন পরিচয় পরবে শুনল,ভাইয়ের বন্ধুটি তার ক্লাসমেটেরও ভাই,তখন সেও উচ্ছল হয়ে উঠল।তাই হয়ত,ছেলেটিকে সে কখনওই শিক্ষক ভাবেনি।ছেলেটি ভদ্র,তাই কখনওই পড়ার ফাঁকে মেয়েটিকে কোনভাবেই ইশারা করেনি।মেয়েটি সরল,তাই সেও একজন নিরব শ্রোতা পেয়ে,মনের সমস্ত খুঁটিনাটি শেয়ার করত হেসে।ছেলেটির অসুখ করায়,মেয়েটিকে বেশিদিন পড়ানো হয়নি।কিন্তু, মেয়েটি নিয়মিত খবর দিত,ভরতি পরীক্ষার ফলাফলের।তাই,যখন সে দেখল,মেয়েটির ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার,শেষ একটা সুযোগ আছে শুধু,১০.৪ জন্ডিস নিয়ে,প্রতিদিন ৫ তলা বেয়ে,মেয়েটিকে পড়াতে আসল।অবশেষে মেয়েটির স্বপ্নপূরণ হল।উচ্ছসিত কন্ঠে জানাল,সে ছেলেটির ভার্সিটিতেই চান্স পেয়েছে।ভরতির দিন অবরোধ থাকায়,মেয়েটি জানাল সে আগের দিন হলে চলে যাবে।ছেলেটি বলল,"আমিও যাব,তোমাকে সাহায্য করতে।"মেয়েটি তার চাচাত ভাইকে জানালে;সে বলল,"তুমি কি বুঝছ না,ও তোমার প্রতি দুর্বল? ও কখন নিজের পরিক্ষার সময় হরতাল থাকলে যায়না;আজ সে তোমার জন্য যাচ্ছে।"মেয়েটি দ্বিধায় পড়ে গেল।পরদিন তাই সে ছেলেটিকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করল।কিন্তু বিধিবাম।ছেলেটি ছায়ার মত ছিল মেয়েটির সংগে।ছেলেটিকে ভাল করে লক্ষ করে,মেয়েটিও বুঝল সব।এরপর,কারণে অকারণে মেয়েটির শুধু তাকেই মনে পড়ে। এভাবেই শুরু হয় দুইটি মানুষের পথচলা।আজ তাদের দাম্পত্য জীবনের ষষ্ঠ বছর চলছে।।।।