By - Lita Sharif

ভালোবাসি তোমাকে অনেক বেশি।প্রতিটি দিন,প্রতিটি ক্ষণ,তোমার সমস্ত অস্তিত্বকে।প্রথমে ভালোবাসি তোমার মনকে,যেখান থেকে আমাদের ভালোবাসা শুরু। ছোট ছোট বিষয়কে কেন্দ্র করে আমাদের ভালোবাসা।হঠাৎ হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে বালিশের পাশে Surprise gift,ভালোবাসার এক আনন্দঘন মুহূর্ত আমাকে বিস্মিত করে।জানি ও আমাকে অনেক ভালোবাসে,কিন্তু আমি ভালোবাসতে চাই তার চেয়েও বেশি।ভালোবাসা আছে বলেই এক একটি দিন আমাদের কাছে এক একটি কবিতা,এক একটি গল্প,যা বলে শেষ করা যাবে না। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠায় কল দিয়ে। এলার্ম দিয়ে রাখলেও আমি উঠতে পারিনা সেইজন্য। আরে উঠবো ভালো কথা নামাজটা পড়ে ঘুমায় যাই! তা না আটটা পর্যন্ত টেবিলে বসে থাকতে হবে। ভালোবেসে সময় দিই বলে তাঁর এত ভাব। আমার কোনও কথা কানে তুলবে না, নিজের ইচ্ছেমতো চলবে! তাহলে আমার অবস্থান কোথায়? আর কেনই বা এর মাঝে রিলেশন নামক শব্দটাকে বাধ্য করে নিজেদের মাঝে লালন করা? তবে যাক এবার উচ্ছন্নে। তাতে আমার কি? শরীফ’র সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে একটু আগে। রাগে গর গর করতে করতে অজানার উদ্দেশে কথার এই বুলেট ছুঁড়ছিলাম আমি। রিলেশন শুরু হবার পর থেকে এমন কোনদিন নেই যে ঝগড়া হয়নি। ছোট ঝগড়া, মাঝারি ঝগড়া, চিল্লাচিল্লি, মুখ ভেংচা-ভেংচি আরও কত কি! সেই তিন বছর আগে ছোট্ট দুটি মন আবেগের বশে কখন যে বলে ফেলেছিল “আই লাভ ইউ”। ঝগড়া করে কথা বন্ধ থাকলেও যোগাযোগ বন্ধ হয়নি আমাদের কখনো। মজার ব্যাপার হলো যতবারই আমাদের কথা বন্ধ হয়েছে ততবারই রিলেশনশিপটা আরও শক্ত হয়েছে বহুগুণে। সেদিন বিছানায় আধশোয়া আমি। রাত একটা। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল। শরীফর ফোন। রিসিভ করবো না করবো না করেও ফোন রিসিভ করে ফেললাম আমি। প্রথমে দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার কথা হলেও ধীরেধীরে কথায় কথায় কথা কাটাকাটির মধ্যে দিয়ে আমাদের কথা শেষ হয়। আজ প্রায় একসপ্তাহ হয়ে গেল শরীফ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। মনটা ভীষণ খারাপ আমার। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। হুট করে আমি মনস্থির করলাম শরীফ’র গ্রামের বাড়ি যাবো। ঠিকানা আগেই সেভ করা ছিল আমার মোবাইলে। শরীফ’র দাদুর বাড়িটা ঘোর গ্রামে। গ্রামে গিয়ে আমি ওদের বাসার গেটে শরীফ’র আম্মুকে দেখে নিশ্চিত হলাম শরীফ এখানেই আছে। আমি শরীফ’র দাদু বাড়ীর থেকে একটু দূরে মূল রাস্তায় একটা কালভার্ট আছে ওখানে গিয়ে বসে পড়লাম। কালভার্ট এর ওপর দুহাত রেখে সামনের পানে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমি। “অত কি ভাবছো” কান্না জড়ানো কণ্ঠস্বরে আমাকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনলো শরীফ। তাকিয়ে দেখি শরীফ আমার দেয়া নীল শাড়িটি পড়েছে আর দেখতে একদম স্বর্গের ইন্দ্রিয় অপ্সরী লাগছে। আমি কিছুই বললাম না। শরীফ বলল—তুমি যখন এসেছ আমি দেখেছি। তারপরই শাড়িটা পড়েছি। না এলে পড়তাম না। মাস খানেক আগে আমিই নিউমার্কেট থেকে শাড়ীটা কিনে দিয়েছিলাম ওকে। বলতে বলতে শরীফ আমার বুকে মাথা রেখে কান্নাজড়িত অভিমানি কণ্ঠে বলতে লাগল, এতদিনে একবারও আমাকে মনে হলো না তোমার! না হয় আমি ভুল করেছিলাম। আমাকে তুমি শাসন করলে না কেন? কেন আমাকে তুমি ফেরালে না? তুমি কি ভেবেছ খুব সুখে আছি তোমাকে ছাড়া! একটানা কথার বুলেট বলেই চলেছে শরীফ। অঝর ধারায় কান্না ওর চোখে। আমি দুহাত দিয়ে শরীফকে জড়িয়ে ধরে আছি। আমার চোখ বেয়ে অশ্রু কখন জিহ্বা ছুয়েছে তা আমি জানি না। অনেকদিন পর আমি আবারও আমি আবিষ্কার করলাম চোখের জলের স্বাদ নোনতা। আর ঐ দিন শরীফ আমাকে উপলব্ধি করিয়েছে যে, ভালোবাসায় দুষ্টু-মিষ্টি ঝগড়া ‘ভালোবাসার ভিশন’-কে করে তোলে আরও সুদৃঢ়।