By - Nirob Shabuj

আমি সবুজ ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। সবার জিবনে কোন না কোন প্রিয় মানুষ বা প্রিয় বন্ধু থাকেই।আর সেই প্রিয় বন্ধু গুলো কে হঠাৎ করেই কেন জানি ভালো লেগে যাই।কাছের বন্ধুটি কেন জানি এক সময় প্রিয় স্হান টা দখল করে নেই।তখন কেউ খুব সহজেই বলে দিতে পাড়ে আবার কেউ বছরের পর বছর অপেক্ষা করেই বলতে পারে না। কাকলি আর আমি একই সাথে পড়তাম।দুজনের বাসা একই গ্রামে হওয়াতে দুজন একি সাথে স্কুলে আসা যাওয়া করতাম।আমরা খুব ভালো বন্ধু ছিলাম।এক সাথে স্কুলে যাওয়া প্রাইভেট পড়া ইত্যাদি। আমরা দুজন কেই তুই করে বলতাম।মাঝে মাঝে কাকলির ব্যাবহারে আপসেট হয়ে যেতাম।মাঝে মাঝে এমন ব্যাবহার করতো মনে হতো দুজন প্রেমিক প্রেমিকা। ক্লাস করার সময় কেমন জানি তাকিয়ে থাকতো। এটা অবশ্য খেয়াল করেছিলাম। কাকলি ছিল একটা সাধারণ মেয়ে।আমি তেমন কখনো ভাবিনি ওর চাহুনিতে কতটা মায়া কতটা ভালো বাসা লুকাইয়ত ছিলো।সে আমাকে বলেছিল ভালোবাসি কিন্তু আমি তাকে ওই ভাবে কোন দিন ভাবিনি।আমি সব সময় ওকে খুব ভালো একজন বন্ধু ভাবতাম।আর একজন ভালো বন্ধুই একজন ভালো প্রেমিক হতে পারে।আর একজন ভালো প্রেমিকই লাইফ পাটনার হতে পারে।একদিন আমি আর কাকলি স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলাম।তখন একটা মেয়ে আমাকে প্রপোজ করে।যদিও কাকলির সামনেই না করে দিয়েছিলাম।তবুও কেন জানি সেদিন কাকলির মুখের দিকে তাকানই যাচ্ছিল না।কেমন যেন হাসি মাখা মুখটা মুহূর্তেই মেঘের মত কালো হয়ে গিয়েছিল।আমি বুঝতে পারিনি সেদিন কেন এমন হয়েছিল।যদিও আজ বুঝতে পেরেছি।সেদিনের পর থেকে কাকলি আর স্কুলে আসেনি কয়েক দিন।আমি তাকে খবর নিতে বাসাই গেলাম আমাকে দেখা মাত্তই কান্না শুরু করে দিলো। কাঁদছে কেন জিঙ্গেস করতেই বলল ওই মেয়ের সাথে কথা বললাম কেন? আমি ওকে বোঝালাম দেখ আমি তো বলতে চাইনি সে এসে প্রপোজ করেছে।সে বলল আমি যেন তার সাথে কথা না বলি।আমি মেনে নিলাম কারন কাকলি আমার বেস্ট ফেন্ড।আমরা সব কিছু শেয়ার করতাম।এমন কি আমি সেন্টার ফুট বেশি খেতাম একটা সেন্টর ফ্রুট শেয়ার করে খেতাম।কেটে গেল কয়েকটি মাস এভাবেই চলতে ছিল।কলেজ লাইফটা,সত্যিই খুব ভালো কাটছিল দিন গুলো।আমি কখনে ভাবিনি কাকলি আমাকে প্রপোজ করবে। কাকলি আমাকে 10/06/2020 তারিখে প্রপোজ করে।আমি তাকে না করে দিলাম।কারন তাকে কখনো বন্ধুর থেকে বেশি কিছু ভাবিনি।আমি আগে থেকেও জানতাম সে আমার প্রতি ওর দুরর্বলতা আছে।তার পর ওর সাথে অনেক দিন কথা বলিনি রাগে প্রপোজ করার জন্য।কিছুদিন পড় অর্ধ বার্ষিক পরিক্ষা চলে আসলো।দুইটা পরিক্ষা দেইনি কাকলি।কেন যানি খবর নিতে ইচ্ছে করছিল।তাই ওর বাসাতেই চলে গেলাম।ওর আম্মার সাথে দেখা।ওর আম্মা কে জিঙ্গেস করাতে বললো জর আসছে দুদিন ধরে কিছু খাচ্ছে না তেমন।ওর পাশে গিয়ে বসলাম মুখটা ফুলে আছে মনে হয় দুদিন খুব কেঁদেছে।আমার হাতটা ধরে খুব কান্না শুরু করে দিলো।বলল প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাস না আমি তোকে ছাড়া বাঁচবো আমি তোকে ভিষন ভালোবাসি।মুহূর্তেই মনটা কেমন যানি হয়ে গেল ওর কান্না দেখে।খুব মায়া লাগলো ওর জন্য।নিজের অজান্তে আমিও কেঁদে ফেললাম।আমি কেঁদেছিলাম কেন? তাকে তো আমি ভালোবাসি না তো কাঁদছিলাম কেন? তার জন্য আমার মায়া হয়েছিল কেন? এই কথা গুলো এখনো মাঝে মাঝে ভাবি। সত্যিই তার জন্য মায়া হয়েছিল খুব মায়া হয়েছিল হয়ত তাকে ভালো বেসে ফেলেছিলাম এই জন্য।ওকে বুঝিয়ে কিছু খাওয়ালাম।বললাম ঠিক আছে তুই যা বলবি তাই হবে।খুব ভালো চলছিল দিন গুলি। সতিই খুব ভালো চলছিল।দেখতে দেখতে টেষ্ট পরিক্ষা চলে আসে আমিও প্রম্তুতি নিলাম ভালোভাবে পরিক্ষা টা দেওয়ার জন্য। দেখতে দেখতে পরিক্ষা টা শেষ হয়ে গেল।খুব ভালো পরিক্ষা দিলাম।একদিন একটা খবর শুনে বাক রুদ্ধ হয়ে গেলাম।কাকলির তার বাবাকে দিয়ে আমাদের বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়ছে,আমি শুনার পর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। আমি আবার আমার মা-বাবার কথার বাহির কিছু করি না,বাবা-মার সব কথা শুনতাম।আর আমার আর কাকলির বিয়ের বিষয়টা কাকলির বাবাকে না করে দিলো,কারণ তারা আমাকে এতো তারাতাড়ি বিয়ে করাবে না,পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করার পরে বিয়ে করাবে। আমি মা কে বলছিলাম কাকলিকে আমি পছন্দ করি তবুও মা আমার কথা শুনেনি। সেদিন সারা রাত কেঁদেছিলাম কাকলির জন্য।কেও দেখেনি সেই কান্নাটা কেও বোঝেনি বুঝতেও চাইনি।যার কারোনে নিজের খুশি নিজের ইচ্ছা আক্ষঙ্খা গুলো মাটি চাপা দিয়ে বাবা মায়ের কথায় আমার পছন্দের মানুষকে পাবো না।আমাদের তো অধিকার আছে।তাহলে কেন বুঝতে চাইনা কেউ আমাদের এবং আমাদের সমাজ গুলো।কি অদ্ভুত আমাদের সমাজ।কাকলির জন্য খুব কষ্ট হতো খুব কান্না করতাম।কত রাত কেঁদে পার করেছি কাকলির কথা ভেবে।কি লাভ সেই কান্নার কোন লাভ নেই।কোন মুল্য নেই সেই কান্না সমাজের কাছে সমাজদের মানুষের কাছে।একদিন শুনলাম কাকলিকে তার বাবা জোর করে বিয়ে দিয়ে দিছে,কারণ কাকলির কথায় তার বাবা আমাদের বিয়ের প্রস্তাব আনছিলো আর আমার মা বিয়ের প্রস্তাব না করে দিয়েছে বলে। শুনলাম এই বিয়েটা কাকলি করতে চায়নি তবুও তার বাবা জোর করে দিছে। কেই না জানুক আমি জানি কাকলি আমাকে কতোটা ভালোবাসতো, খুব ভালোবাসতো আমাই।কাকলি এখন ভালো আছে খুব ভালো আছে। আমিও চাই সে খুব ভালো থাকুক প্রতিটা দিন প্রতিটা ক্ষন প্রতিটা সময়, আর কাকলিকে না পাওয়ার কষ্টটা আমারি থেকে গলে।