By - Sahana Akter

আমাদের পরিচয়টা মুলত ফেসবুকের মাধ্যমে, নাম ছিল তার ওমর! আর পেশায় ছিল টিচার। কৌতূহল নিয়েই তার সাথে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলাম।এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেল কোচিং, আর দুজন দুই গ্রুপের, আমি ভার্সিটি এডমিশন আর তিনি মেডিকেল এর জন্যে। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে হত কথা ফুলঝুরি। দুজন দুজনকে জানা, এতটাই কাছাকাছি হলাম যে আত্বার সম্পর্কীয় এমন মনে হত। একসময় দুজনকে তুই করে বলা শুরু করলাম।এতদিন কথা হত স্ক্রিনের পর্দায় লেখাপড়া তে, তাই তার নাম্বারটা চাইলাম। তিনি বললেন কেনো? আর আমার সরল বাক্যে উত্তর "দরকার আছে বলেই চেয়েছি, বিশ্বাস হলে দাও" | অবশেষে পেয়ে গেলাম। কখনো জন্মদিনের উইশ পাইনি, আর আজ রাত ১২টা না বাজতেই ফেসবুক ওয়ালে শুভেচ্ছার ঝড় বইতে লাগল। তবে ঠিক ১২টায় তিনি ওয়ালে কিছু কথা লিখে উইশ করেন। কিন্তু সে কথাগুলো আমার হৃদয় দুলাতে যথেষ্ট ছিল।১৭ই জুলাই। রাত ১১.৫১ আজই প্রথম তার সাথে কথা হবে সে সুখের ভাবনাটাই ছিল অন্যরকম! যখম ওপাশের ধ্বনি ভেসে আসল, কণ্ঠ শুনে আমি যেন দ্বিতীয় বার..! এরই মধ্যে ঈদুল ফিতর আসল, অপেক্ষায় তার শুভেচ্ছার উত্তরের, কিন্তু আর উত্তর পেলাম না। যেন হারিয়েই গেল। এক স্বর্ণালী সন্ধায় এসে ঘন কালো সাঁঝে অস্তমিত হল! বিচ্ছেদের কষ্টটা নিতে না পারলেও কোচিং চালিয়ে যাচ্ছিলাম, পরীক্ষা নিকটেই আসতে লাগল। হঠাৎ একদিন ফোনে টেক্সট এল যে, "কিরে কেমন আছিস? পরীক্ষার প্রস্তুতি কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি..!" অচেনা নাম্বার তাই ফোন দিলাম, কিন্তু ধরল না। উল্টা টেক্সট আসল ভুলেও ফোন দেয়ার ট্রাই করবি না, আমি তর বড় ভাই। কিছুদিন এভাবে টেক্সট আদান প্রাদানের পর পারলাম এটাই আমার হারিয়ে যাওয়া তিনি..! হঠাৎ একদিন ফোন আসল সে নাম্বার থেকে, তার গলার স্বর টা শুনতে ফোন টা ধরতে খুব বেশি দেরি করিনি। লুফিয়ে নিয়েছি হাতে ।তার স্বর শুনে যেন আমি নতুন প্রাণ পেলাম। চলতে লাগল আবার; সকাল-সন্ধা আর রাত | বেগম রোকেয়ার ফর্ম তুলেছিলাম শুধু তাকে কাছ থেকে দেখব সে বাহানায়। মে মাসের ৪ তারিখ ভোরে রংপুর নামলাম, আর আমার সামনে যেন এক handsome কে পেলাম। ভাললাগাটা ভালবাসায় পরিনত হল। অনেক সাহস নিয়ে হাত ধরার পারমিশন টা নিয়েছিলাম! একসময় চলে আসতে হল! কিন্তু তার জন্যে আমার মায়াটা রেখে এলাম। সে মায়ায় আজো ঘুরে আসি, তার একটু ছুয়া পেতে, কাছ থেকে একটু দেখতে, একটু ভালবাসতে!! অনেক দিন টুকটাক চ‍্যাট হত। পরে ফোনালাপ। একবছর পর চাকরি থেকে ফেরার সময় আমি ফোন দিয়ে দেখা করলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে। আমি সাদা জামা এবং সে সাদা শার্ট পরেছিল। প্রথম দেখার সেই দিন থেকেই আজও দুজনে এক সাথে। আমরা এখন চারজন। আমাদের জন্যে দোয়া করবেন।