দুই জনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ব্যাচের,একই বিভাগের ছাত্রছাত্রী ছিলাম,এবং কেমন করে যেন ক্লাসে প্রায় ১২০ জন ছাত্রছাত্রী থাকার পরও প্রথম দিনই ওর সাথে পরিচয় হয়।আর ঘুরে ঘুরে যাই করি কেমনে যেন ওর সাথেই কথা হয়,হল থেকে বের হলে ওর সাথেই দেখা হয় আর নোটস চাইলে কেন যেন ওর কাছেই পাওয়া যায়।আমি ম্যাথে বরাবরই কাঁচা,একবার ম্যাথ পরিক্ষায় খুব খারাপ করে চারতলার বারান্দায় দাড়িয়ে কাঁদছিলাম আর ভাবছিলাম ম্যাথ পারিনা তো এই জীবন রেখে কি লাভ,তখন রাম ধমক খেলাম, "আমাকে ফোন দিলেই তো সব বুঝিয়ে দিতাম ম্যাথ"।এরপর প্রথমে বড় বড় ম্যাথ সমস্যা তারপর ছোট ছোট ম্যাথ সমস্যা,তারপর সমস্যার সমস্যার এরপর আজাইরা সমস্যয় কথা চলতে থাকলো।একটা সময় এমন হলো একটা নির্দিষ্ট সময় আর দুজন কথা না বলে থাকতে পারি না।ক্লাসে দেখি ও একদম আমার আশেপাশেই বসে আর ক্লাস বাদ দিয়ে আমার দিকে চেয়ে থাকে।আমার বান্ধবী যে কিনা ক্লাসের হার্টথ্রব গার্ল বলেই বসলো দেখলি ও অন্য ছেলেদের মতো আমার দিকে চেয়ে থাকে,দেখবি তোদের ফাস্ট বয় কয়দিনের মধ্য আমাকে প্রপোজ করবে।কথাটা বিশ্বাস না হলেও প্রথমবার কোথায় যেন বুকের ভেতর একটা ধাক্কা দিলো।সেদিন আর ফোন ধরলা না দিলামও না।পরদিন ক্লাসে গেলাম না, ফোন দিলাম না।শুধু কান্না পাচ্ছিলো।কেন জানিনা।অথচ আমি জানি ও এমন না।জাস্ট কয়দিন আগেই বেচারার গার্লফ্রেন্ড এর বিয়ে হয়ে গেছে।ওর এই ডিপ্রেশন কাটাতেই মনে হয় ওকে সঙ্গ দিতে বেশী বেশী কথা বলতাম ফোনে।এদিকে আমার সাথে কথা না বলতে পেরে বেচারা পাগলপ্রায়। আমার হলের রুমমেটদের একাধারে ফোন দিয়ে যাচ্ছে।রাগ নিয়েই ফোন ধরলাম,বেচারা প্রায় কেঁদে জিম্গাস করলো তার অপরাধ।সত্যিইতো কি অপরাধ।জানিনা,নিজেই নিজের আচরণে অবাক হয়ে যাচ্ছি, এ সময় বললো,আমাকে ছেড়ে যেওনা প্লিজ, সাথী হবে???সারাজীবন পাশাপাশি থেকে কথা বলার সাথী। এই কথা ৪ বছরের বন্ধুত্ব থেকে ৬ বছরের পরিনয়,আর পরিনয় শেষে ৪ বছর হলো আমরা বিবাহ বন্ধনের বাঁধায় বাধাঁয় বাধলো।পারিবারিক অনেক বাধা মোকাবেলা করে আমরা এক হলাম।দুজনের দুটো ভালো চাকুরী হলো। মাশাআল্লাহ আমাদের দুই বছরের ছোট্ট ছানাটাকে নিয়ে আমাদের লাল নীল সুখের সংসার।