By - Sohana Rahman Faiza

আমাদের প্রথম দেখা বসুন্ধরা শপিং মলে। ভুল করে ধাক্কা গেলে সরি বলা,তারপর দু'জন একসাথে একই রেস্টুরেন্টে কাকতালীয় ভাবে খেতে বসা,গল্প করা,ফেসবুক আইডি আদান প্রদান তারপর ভালো লাগার কথা থেকে ভালোবাসা। আমাদের বন্ধুত্ব ছিলো ৬ মাসের মতো। হুট করেই প্রেম করে বসি নি। সময় নিয়েছি,চিনেছি,জেনেছি। যখন মনে হয়েছে,ও আমার জন্য পারফেক্ট তখন ই ওর প্রপোজাল এক্সেপ্ট করেছি। রিলেশনের প্রথম দিনগুলার কথা যদি বলি,বেশ মজার ছিলো। রাতে ফিসফিস করে কাঁথার নিচে ঢুকে কথা বলতাম,ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে৷ কখনো কখনো বারান্দায় বসে,বারান্দার দরজা আটকে কথা বলতাম যেনো পাশের রুমে আম্মু না শুনে! বেশি সমস্যা হতো শীতকালে। ফ্যান তো অফ! কথা বললেই শুনে ফেলে এ অবস্থা! তখন ও বলতো- আমি কথা বলি তুমি টাইপ করে উত্তর দাও। সে এক মজার অভিজ্ঞতা! মাঝে মাঝে কথা বলতে মনে না চাইলে ও গান ছাড়তো, ফোনে স্ক্রিন শেয়ার করে গান শুনতাম। এখনো মাঝেমধ্যে এমন করি। বেশ মজা লাগে। বলি যে, এ গান ছাড়ো,ওটা রাখো। মাঝেমধ্যে একসাথে কার্টুন দেখি। ও ভ্রুঁ কুঁচকে বলে- এখনো বাচ্চা রয়ে গেছো তুমি! বাসার দূরত্ব বেশি হওয়াতে সব সময় আসতে পারে না বাসার নিচে। তবে স্পেশাল অকেশনে আসে৷ যেমন - ঈদের বিকেলে এসে রাস্তা থেকে হাত নেড়ে যায়। আমার জন্মদিনে নিজে ডেলিভারি ম্যান সেজে এসে আমাকে গিফট দিয়ে যায়। এবার আমাকে একটা থ্রি পিস,ফুল আর চকলেটস দিয়েছিলো। ওর জন্মদিনে আমি বরাবরই টেস্টি ট্রিট থেকে কেক,ডেজার্ট,স্ন্যাকস পাঠিয়ে দেই। এখন অবশ্য বাসায় আম্মু আর ভাই জানে,তাই ফিসফিস করে কথা বলতে হয় না। একটু জোরেশোরেই বলি। ওর জব থাকার কারণে সচরাচর চাইলেই হুটহাট মিট হয় না৷ তবে যেদিন হয়, সেদিন একসাথে অনেকক্ষণ আমরা টি-এস-সি,সোহরাওয়ার্দী, কার্জন হল ঘুরি,প্রচুর ছবি তুলি। আমাদের ভালোবাসাতে রাগারাগি হলেও সাময়িক থাকে। ও অবশ্য রাগ হলে আইডি ডি এক্টিভ করে চলে যায়, তখন আমার আবার খুব লোনলি ফিল হয়৷ আমি যতক্ষণ পর্যন্ত না কল দিবো,সে আইডি অন করবে না। এইতো চলছে আমাদের ছোট ছোট মিষ্টি ভালোবাসার মুহুর্ত। আর হ্যাঁ, এবার ভ্যালেন্টাইনে ও আমাকে "চকলেট,গোলাপ,টেডি আর ডায়েরি" গিফট করেছিলো৷ আমাদের ভালোবাসার ভিশন হচ্ছে "আমরা তো এখন দূরে থাকি,ইনশাআল্লাহ্ একদিন রাঙ্গামাটি যাবো" যেদিন আমরা হালাল ভাবে কাছাকাছি আসবো। আমাদের দুজনেরই খুব শখ সকালের নতুন সূর্য টা একসাথে দেখার। ওর ভিশন জিজ্ঞেস করলে বললো- আমার হাতে এক কাপ চা,মিষ্টি সকালে মিষ্টি চা৷ আমাদের ভিশন এক সূতোয় গাঁথা৷ আমরা বহুদূরে যাবো,লং ট্যুরে যাবো,রাঙ্গামাটি যাবো,ও সকালে আমার হাতে বানানো চা খাবে! ব্যস! আর কি! এইসব ছোট ছোট ভিশন ই তো জীবনকে সুন্দর করে তোলে৷